"থামো , জানোয়ারগুলির মুখোমুখি রুখে দাঁড়াও।"

 "থামো , জানোয়ারগুলির মুখোমুখি রুখে দাঁড়াও।"

“থামো , জানোয়ারগুলির মুখোমুখি রুখে দাঁড়াও।“


প্রথমবার ভ্রমণে বেরিয়েছেন ১৮৮৭ খ্রীষ্টাব্দে। স্বামী প্রেমানন্দ ও আর একজন ভদ্রলোকের সঙ্গে তিনি গেছিলেন বারাণসীধাম। বিশ্বনাথ, অন্নপূর্ণা ও দুর্গাদেবীর বিগ্রহ দর্শন ছাড়াও তিনি স্মরণ করে আনন্দ পেয়েছিলেন যে, এই দেবভূমিতে ধর্মপ্রচার করেছেন ভগবান বুদ্ধ ও শংকর। একদিন দুর্গামন্দির থেকে ফেরবার সময় স্বামীজীর একটি অদ্ভুত অভিজ্ঞতা হয়। কতগুলি বানর স্বামীজীকে তাড়া করে। একপাল বানর, কাজেই স্বামীজী ছুটতে লাগলেন। বানরগুলিও ছুটতে লাগল। এমন সময় একজন বৃদ্ধ সন্ন্যাসী স্বামীজীকে বলল: ‘থামো , জানোয়ারগুলির মুখোমুখি রুখে দাঁড়াও ।” স্বামীজী সাহসভরে ফিরে দাঁড়ালেন - বানরগুলো প্রথমে থমকে দাঁড়ালো, তারপর ছুটে পালাল। এই ঘটনা থেকে স্বামীজী তাঁর জীবনের একটি মহৎ শিক্ষা পেলেন - বিঘ্ন বা বিপদ দেখে কখনও পালিয়ে যেতে নেই, নির্ভয়ে তার মুখোমুখি দাঁড়াতে হয়। পরবর্তী জীবনে নিউইয়র্কে একটি বক্তৃতায় স্বামীজী এই ঘটনার উল্লেখ করে বলেছিলেন : “এই হল সারা জীবনের জন্য একটি শিক্ষা- ভয়ঙ্করের মুখোমুখি দাঁড়াও, সাহসের সঙ্গে তার সম্মুখীন হও। জীবনের দুঃখ কষ্ট দেখে আমরা যখন আর পালিয়ে যাই না, এ বানরগুলির মতোই তারা তখন আমাদের কাছ থেকে পিছু হটে যায়। যদি আমাদের মুক্তি পেতে হয়, তবে প্রকৃতিকে জয় করে তা পেতে হবে- প্রকৃতি থেকে পালিয়ে গিয়ে নয়। কাপুরুষ কখনও জরী হয় না। যদি আমরা চাই যে ভয়, বাধাবিপত্তি এবং অজ্ঞতা আমাদের সামনে থেকে দূর হয়ে যাবে, তবে আমাদের সেগুলির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।'

গ্রন্থসূত্রঃ- পরিব্রাজক স্বামীজী : দেশে ও বিদেশে (বরানগর মঠ থেকে শিকাগো )

                প্রকাশক-রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অব কালচার

পৃষ্ঠাঃ ১২


Post a Comment

0 Comments