Swami Vivekananda Quotes in Bengali
জ্ঞান ভক্তি যোগ এবং কর্ম - মুক্তির এই চারটি পথ। প্রত্যেকের কর্তব্য তার উপযুক্ত পথটি অনুসরণ করে চলে। তবে এই যুগে কর্মযোগের উপরেই বিশেষ গুরুত্ব দেয়া উচিত।
সমগ্র মানবজাতির শেষ পরিণতি, সব ধর্মের লক্ষ্য ও পরিসমাপ্তি বস্তুত একই - ভগবানের সঙ্গে পুনর্মিলন, কিংবা বলা যেতে পারে, যে দেবত্ব মানুষের প্রকৃত স্বরূপ সেই দেবত্বে প্রত্যাবর্তন । কিন্তু লক্ষ্য এক হলেও সেখানে পৌঁছানোর পথ মানুষের রুচি অনুযায়ী বিভিন্ন হতে পারে ।
দেবত্বে পুনঃ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার লক্ষ্য এবং পদ্ধতি উভয়কেই 'যোগ ' বলা হয় । সংস্কৃত 'যোগ ' এবং ইংরেজি ' ' শব্দটি একই সংস্কৃত মূল (ধাতু) থেকে উৎপন্ন । অর্থ হচ্ছে - যুক্ত করে দেওয়া। 'যোগ ' মানে যা আমাদের ঈশ্বরের সঙ্গে, আমাদের প্রকৃত স্বরুপের সঙ্গে যোগ করিয়ে দেয় । এই রকম 'যোগ ' বা যুক্ত হওয়ার পদ্ধতি অনেক আছে । সেগুলোর মধ্যে প্রধান হচ্ছে কর্মযোগ , ভক্তিযোগ, রাজযোগ এবং জ্ঞানযোগ।
পুণ্যকাজ হচ্ছে সেইটা যা আমাদের উন্নতি ঘটায়, আর পাপ হচ্ছে - যা আমাদের অবনতি ঘটায়। মানুষের মধ্যে তিনরকম সত্তা থাকে - পাশবিক, মানবিক এবং দৈবী। যা তোমার মধ্যে দৈবীভাব বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে তা-ই হচ্ছে পুণ্য। আর যা তোমার মধ্যে পশুভাব বাড়িয়ে তোলে - তা পাপ !তোমাকে ধ্বংস করতেই হবে পশুসত্তাকে, হয়ে উঠতে হবে প্রকৃত 'মানুষ' - প্রেমময় এবং দয়াশীল। তারপর তা-ও অতিক্রম করে যেতে হবে। হয়ে উঠতে হবে শুদ্ধ আনন্দ - সচ্চিদানন্দ; যেন এমন এক আগুন যা দহন করবে না কখনও ; অপূর্ব ভালবাসায় পূর্ণ - যে ভালবাসায় মানুষের ভালবাসার দুর্বলতা নেই, নেই কোন দুঃখবোধ।
মানুষ যে অবস্থায় আছে, সেই অবস্থায় ধর্ম যদি তাকে সাহায্য করতে না পারে , তবে ধর্মের বিশেষ কোনও মূল্যই নেই - তা কয়েকজন ব্যক্তির জন্য মতবাদ হিসেবেই থেকে যাবে। ধর্মের সাহায্যে যদি সমগ্র মানবজাতির কল্যাণ করতে হয়, তবে ধর্মকে এমন হতে হবে যে, মানুষ যেখানে যে - অবস্থায় আছে , সেখানেই তার সাহায্য পেতে পারে - দাসত্বে বা পূর্ণ স্বাধীনতায়, অধঃপাতের গহ্বরে বা পবিত্রতার উচ্চ শিখরে - ধর্ম যেন সব সময় সমানভাবে মানবজাতিকে সাহায্য করতে পারে।
Swami Vivekananda Bani in Bengali
যা কিছু আধ্যাত্বিক, মানসিক কিংবা শারীরিক দুর্বলতা আনে - তাকে ছুঁয়েও দেখবে না। মানুষের মধ্যে যে স্বাভাবিক শক্তি আছে, তার বিকাশই ধর্ম। অসীম শক্তিসম্পন্ন একটা স্প্রিং মানুষের এই ছোট্ট শরীরটার মধ্যে গোটানো আছন, এবং সেই স্প্রিং ধীরে ধীরে খুলে আসছে। ...মানুষ , ধর্ম , সভ্যতা এবং তার অগ্রগতি - সবকিছুই এই একই ইতিহাস।
সাধারণত চার ধরনের মানুষ দেখা যায় - যুক্তিবাদী , ভাবপ্রবণ, রহস্যবাদী এবং কর্মী । এদের প্রত্যেকের জন্যই উপযুক্ত সাধন পদ্ধতি থাকা চাই । যুক্তিবাদী বলবেনঃ আমি এরকম সাধন পদ্ধতি মানি না - আমাকে বিশ্লেষণ - মূলক যুক্তিসিদ্ধ কিছু বলুন, যাতে আমার মন সায় দিতে পারে । সুতরাং বিচারবাদীর সাধন - পথ হলো দার্শনিক - বিচার। তারপর কর্মী এসে বলবেনঃ আমি দার্শনিকের সাধনপদ্ধতি মানি না। আমাকে মানুষের জন্য কিছু করতে দিন। সুতরাং তার জন্য কর্মই উপাসনার পথ হিসেবে নির্দিষ্ট হয়েছে। রহস্যবাদী এবং ভাবপ্রবণ লোকেদের জন্য উপযুক্ত সাধন - পথ রয়েছে। এঁদের সকলের জন্যই ধর্মে তাঁদের নিজের নিজের অবস্থা অনুযায়ী ব্যবস্থা রয়েছে।
বেদান্তের মূলকথা - একত্ব বা অখন্ডভাব । দুই কোথাও নেই, দুই প্রকার জীবন নেই অথবা দুটি জগৎও নেই । ...একটিমাত্র জীবন আছে, একটি মাত্র জগৎ আছ্ একটিমাত্র অস্তিত্ব আছে,। সবই এক সত্তা। প্রভেদ শুধু পরিমাণগত, প্রকারগত নয়( in degree, and not in kind )। ... আমিও যেমন, একটি ক্ষুদ্র জীবাণু তেমন - প্রভেদ কেবল পরিমাণগত, আর সেই সর্বোচ্চ সত্তার দিক থেকে দেখলে এ প্রভেদও দেখা যায় না।
বেদান্তের সিদ্ধান্তই এই - আমরা বদ্ধ নই, আমরা নিত্যমুক্ত। শুধু তাই নয়, আমরা বদ্ধ - একথা বলা বা ভাবাই বিপদজনক, এই রকম ভাবা ভুল - নিজেকে নিজে সম্মোহিত করা মাত্র। যখনই তুমি বল - 'আমি বদ্ধ', 'আমি দুর্বল', 'আমি অসহায়', তখনই তোমার দুর্ভাগ্যের আরম্ভ, তুমি নিজে পায়ে আর একটি শিকল জরাচ্ছ শুধু। এরকম বোলো না, এরকম ভেবোও না।
ভক্তিপথের একটা বিরাট সুবিধা হলঃ
এইটি সেই পরম লক্ষ্যে পৌঁছানোর সবচেয়ে সহজ এবং স্বাভাবিক পথ।
আর এই পথের অসুবিধে হচ্ছে;
ভক্তি তার নিচু অবস্থায় প্রায়ই ভয়ংকর ধর্ম উন্মাদনার স্তরে
অবনমিত হয়ে আসে।
Swami Vivekananda Speech in Bengali
বেদান্ত বলে, দুর্বলতাই সংসারের সমস্ত দুঃখের কারণ,
দুর্বলতাই দুঃখভোগের একমাত্র কারণ।
আমরা দুর্বল বলেই এত দুঃখভোগ করি।
আমরা দুর্বল বলেই চুরি-ডাকাতি মিথ্যে জুয়াচুরি বা অন্যান্য পাপ করে থাকই।
দুর্বল বলেই আমরা মৃত্যুমুখে পড়ি।
যেখানে আমাদের দুর্বল করবার কিছুই নেই,
সেখানে মৃত্যু বা কোনরকম দুঃখ থাকতে পারে না।
আমরা দুঃখবোধ করছি একটি মহাভ্রান্তির জন্য।
সেই ভ্রান্তিটি ত্যাগ করো, সব দুঃখ চলে যাবে।
ভক্তি তোমার ভিতরে রয়েছে, কেবল তার উপর কাম -
কাঞ্চনের একটা আবরণ পড়ে আছে। ঐ আবরণটা সরিয়ে দিলে সেই ভিতরকার ভক্তি
আপনিই প্রকাশিত হয়ে পড়বে।
ভক্তি খুব বড় জিনিস,
কিন্তু এতে নিরর্থক ভাবপ্রবণতা
এসে আসল জিনিসটাই নষ্ট হবার যথেষ্ট ভয় আছে।
সকল বিষয়ে আজ্ঞাবহতা শিক্ষা করাে; নিজ ধর্মবিশ্বাস ত্যাগ কোরাে না,
গুরুজনের অধীন হয়ে চলা ছাড়া কখনই শক্তির কেন্দ্রীকরণ হতে পারে না।
আর এরুপ বিচ্ছিন্ন শক্তিগুলিকে কেন্দ্রীভূত না করলে কোনও বড় কাজ হতে পারে না ।
...ঈর্ষা অহংভাব তাড়িয়ে দাও - সঙ্ঘবদ্ধভাবে অপরের জন্য কাজ করতে শেখে।
আমাদের দেশে এটার বিশেষ অভাব।
অনন্ত ধৈর্য, অনন্ত পবিত্রতা, অনন্ত অধ্যবসায়—এই তিনটি জিনিস থাকলে যে - কোনও সৎ আন্দোলনে অবশ্যই সফল হতে পারা যায় ; এই হল সিদ্ধিলাভের রহস্য।
‘অনেক সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট।’ ভারতে একটা জিনিসের বড়ই অভাব— একতা বা সংহতিশক্তি, তা লাভ করবার প্রধান রহস্য হচ্ছে আজ্ঞানুবর্তিতা।
Swami Vivekananda Education Speech in Bengali
বীরের মতাে এগিয়ে চলাে। একদিনে বা একবছরে সফলতার আশা কোরাে না। সবসময় শ্রেষ্ঠ আদর্শকে ধরে থাকো। দৃঢ় হও, ঈর্ষা ও স্বার্থপরতা বিসর্জন দাও। নেতার আদেশ মেনে চলাে ; আর সত্য, স্বদেশ ও সমগ্র মানবজাতির কাছে চিরবিশ্বস্ত হও; তা হলেই তুমি জগৎ কাঁপিয়ে তুলবে। মনে রাখবে—ব্যক্তিগত ‘চপিয়ে’ এবং ‘জীবন’ই শক্তির উৎস, অন্য কিছু নয়।
চতুর্দিকে অন্ধকার যতই ঘনিয়ে আসে, উদ্দেশ্য ততই নিকটবর্তী হয়,
ততই জীবনের প্রকৃত অর্থ - জীবন যে স্বপ্ন, তা পরিস্ফুট হয়ে ওঠে ;
কেন যে মানুষ এটা বুঝতে পারে না, তাও বােঝা যায়—
তারা যে কেবলই চেষ্টা করে এসেছে যা অর্থহীন তার মধ্যে থেকে অর্থ খুঁজে নিতে।
...‘সবই ক্ষণিক, সবই পরিবর্তনশীল’-
এইটুকু নিশ্চয়ই জেনে জ্ঞানী ব্যক্তি সুখ-দুঃখ ত্যাগ করে
জগৎবৈচিত্রের সাক্ষিমাত্ররূপে অবস্থান করেন, কোনওকিছুতে আসক্ত হন না।”
কেবল সংখ্যাধিক্য দিয়েই কোনও মহৎ কাজ সম্পন্ন হয় না ;
অর্থ, ক্ষমতা, পাণ্ডিত্য কিংবা বাকচাতুরী—এদের কোনােটারই বিশেষ কোনও মূল্য নাই।
পবিত্র, খাঁটি এবং প্রত্যক্ষানুভূতি-সম্পন্ন মহাপ্রাণ লােকেরাই জগতে
সব কাজ করে থাকেন।
যদি প্রত্যেক দেশে এমন দশ-বারােটা মাত্র সিংহবীর্যসম্পন্ন লােক জন্মগ্রহণ করেন,
যাঁরা নিজেদের সমুদয় মায়াবন্ধন ছিন্ন করেছেন, যাঁরা অসীমের স্পর্শ লাভ করেছেন,
যাঁদের চিত্ত ব্ৰহ্মানুধ্যানে নিমগ্ন, অর্থ যশ ও ক্ষমতার স্পৃহামাত্রহীন—
তবে এই কয়েকজন লােকই সমগ্র জগৎ তােলপাড় করে দেবার পক্ষে যথেষ্ট ।"
" আমরা যেন নাম, যশ ও প্রভুত্ব-স্পৃহা বিসর্জন দিয়ে কাজে ব্রতী হই, আমরা যেন কাম, ক্রোধ ও লােভের বন্ধন থেকে মুক্ত হই। তা হলেই আমরা সত্য বস্তু লাভ করব।”
কারুর উৎসাহ ভঙ্গ করতে নাই। Criticism (বিরুদ্ধ সমালােচনা) একেবারে ত্যাগ করবে। যতদূর ভাল বােধ হয়, সকলকে সাহায্য করবে ; যেখানটা ভাল না বােধ হয় ধীরে বুঝিয়ে দিবে। পরস্পরকে criticise (বিরুদ্ধভাবে সমালােচনা) করাই সকল সর্বনাশের মূল ! দল ভাঙবার ঐটি মূলমন্ত্র। ও কী জানে ? সে কী জানে ? ‘তুই আবার কী করবি ?'—আর তার সঙ্গে ঐ একটু মুচকে হাসি, ঐগুলাে হচ্ছে ঝগড়া-বিবাদের মূলসূত্র।
Swami Vivekananda Bengali Bani
চালাকি দ্বারা কোনও মহৎ কার্য হয় না। প্রেম, সত্যানুরাগ ও মহাবীর্যের সহায়তায় সকল কার্য সম্পন্ন হয়। সুতরাং পৌরুষ প্রকাশ করাে।
নিজেরা কিছু করে না এবং অপরে কিছু কিছু করিতে গেলে ঠাট্টা করে উড়িয়ে দেয়
—এই দোষেই আমাদের জাতের সর্বনাশ হইয়াছে।
হৃদয়হীনতা,উদ্যমহীনতা সকল দুঃখের কারণ। অতএব ঐ দুইটি পরিত্যাগ করিবে।”
পেছন ফিরে তাকানাের প্রয়ােজন নাই। আগে চলাে ! আমাদের চাই অনন্ত শক্তি, অফুরন্ত উৎসাহ, সীমাহীন সাহস, অসীম ধৈর্য, তবেই আমরা বড় বড় কাজ করতে পারব।”
যেসকলের দাস, সেই সকলের প্রভু। যার ভালবাসায় ছােট বড় আছে, সে কখনও অগ্রণী হয় না। যার প্রেমের বিরাম নাই, উচ্চ নীচ নাই, তার প্রেম জগৎ জয় করে।
জগতের ধর্মগুলাে এখন প্রাণহীন মিথ্যা অভিনয়ে পর্যবসিত। জগতের একান্ত প্রয়ােজন হল চরিত্র। জগৎ এখন তাঁদের চায়, যাঁদের জীবন প্রেমদীপ্ত এবং স্বার্থশূন্য। সেই প্রেম প্রতিটি কথাকে বজ্রের মতাে শক্তিশালী করে তুলবে।
Swami Vivekananda Bengali Speech
পবিত্র হও ও সর্বোপরি অকপট হও;
মুহূর্তের জন্যও ভগবানে বিশ্বাস হারিও না—তা হলেই আলাে
দেখতে পাবে। যা-কিছু সত্য, তাই চিরস্থায়ী ,
কিন্তু যা সত্য নয়, তাকে কেউ বাঁচাতে পারবে না।
.আমি চাই এমন লােক—যাদের পেশী লােহার মতাে দৃঢ় ও স্নায়ু ইস্পাত দিয়ে তৈরি, আর তার মধ্যে থাকবে এমন একটা মন, যা বজ্রের উপাদানে গঠিত। বীর্য, মনুষ্যত্ব—ক্ষাত্রবীর্য, ব্রহ্মতেজ !"
সকলে নিজেদের আদর্শ ধরে থাকো, আর অন্য কিছুর প্রতি খেয়াল কোরাে না - সত্যের জয় হবেই হবে। সর্বোপরি, তুমি যেন অপরকে চালাতে বা তাদের শাসন করতে, অথবা ইয়াঙ্কিরা যেমন বলে অপরের উপর ‘boss (মাতব্বরি) করতে যেও না, সকলের দাস হও।
ঐ যে কানে কানে গুজোগুজি করা—তা মহাপাপ বলে জানবে ; ঐটা ভায়া, একেবারে ত্যাগ দিও। মনে অনেক জিনিস আসে, তা ফুটে বলতে গেলেই ক্রমে তিল থেকে তাল হয়ে দাঁড়ায়। গিলে ফেললেই ফুরিয়ে যায়।
...পরােপকারই ধর্ম, বাকি যাগযজ্ঞ সব পাগলামাে—নিজের মুক্তি - ইচ্ছাও অন্যায়। যে পরের জন্য সব দিয়েছে, সেই মুক্ত হয়, আর যারা ‘আমার মুক্তি, আমার মুক্তি’ করে দিনরাত মাথা ভাবায় তাহারা ‘ইতাে নষ্টততা ভ্রষ্টঃ’ হয়ে বেড়ায়।
Bengali Speech of Swami Vivekananda
পরােপকারই ধর্ম, পরপীড়নই পাপ। শক্তি ও সাহসিকতাই ধর্ম, দুর্বলতা ও কাপুরুষতাই পাপ। স্বাধীনতাই ধর্ম, পরাধীনতাই পাপ। অপরকে ভালবাসাই ধর্ম, অপরকে ঘৃণা করাই পাপ। ঈশ্বরে ও নিজ আত্মাতে বিশ্বাসই ধর্ম, সন্দেহই পাপ। অভেদ-দর্শনই ধর্ম, ভেদ-দর্শনই পাপ।
হে বীরহৃদয় বালকেরা, অধ্যবসায় করাে। আমাদের কাজ সবেমাত্র আরম্ভ হয়েছে। কখনও নিরাশ হয়াে না, কখনও বােলা না, ‘আর না, যথেষ্ট হয়েছে।’
আমি চাই, আমার সব ছেলেরা, আমি যত বড় হতে পারতাম, তার চেয়ে শতগুন বড় হােক। তােমাদের প্রত্যেককেই এক একটা ‘দানা’ হতেই হবে— আমি বলছি, - অবশ্যই হতে হবে। আজ্ঞাবহতা, উদ্দেশ্যের উপর অনুরাগ ও সবসময় তৈরি হয়ে থাকা—এই তিনটে যদি থাকে, কিছুতেই তােমাদের হটাতে পারবে না।”
টাকা-ফাকা সব আপনা-আপনি আসবে। মানুষ চাই, টাকা চাই না। মানুষ সব করে, টাকায় কী করতে পারে ? মানুষ চাই—যত পাবে ততই ভাল।
জগতের সমস্ত ধনসম্পদের চেয়ে ‘মানুষ’ হচ্ছে বেশি মূল্যবান।
Bengali Bani of Swami Vivekananda
আমরণ কাজ করে যাও—আমি তােমাদের সঙ্গে সঙ্গে রয়েছি, আর আমার শরীর চলে গেলেও আমার শক্তি তােমাদের সঙ্গে কাজ করবে।
হে বৎস, যথার্থ ভালবাসা কখনও বিফল হয় না। আজই হােক, কালই হােক, শত শত যুগ পরেই হােক, সত্যের জয় হবেই, প্রেমের জয় হবেই। তােমরা কি মানুষকে ভালবাস ? ঈশ্বরের সন্ধানে কোথায় যাচ্ছ ? দরিদ্র, দুঃখী, দুর্বল সবাই কি তােমার ঈশ্বর নয় ? আগে তাদের উপাসনা কর না কেন ? গঙ্গাতীরে বাস করে কূপ খনন করছ কেন ? প্রেমের সর্বশক্তিমত্তায় বিশ্বাস করাে। নামযশের মত চাকচিক্যে কী হবে ? খবরের কাগজে কী বলে না বলে, আমি সেদিকে লক্ষ্য করি না। তােমার হৃদয়ে প্রেম আছে তাে ? তবেই তুমি সর্বশক্তিমান। তুমি সম্পূর্ণ নিস্কাম তাে ? তা যদি হও, তবে তােমার শক্তি কে রােধ করতে পারে? চরিত্রবলে মানুষ সর্বত্রই জয়ী হয়। ঈশ্বরই তাঁর সন্তানদের সমুদ্রগর্তে রক্ষা করে থাকেন। তােমাদের মাতৃভূমি বীর সন্তান চাইছে। তােমরা বীর হও।
যদি শাসন করতে চাও, সকলের গােলাম হয়ে যাও। এই হল আসল রহস্য।
কোথায় ইতিহাসের কোন যুগে ধনী ও অভিজাত সম্প্রদায়, পুরােহিত ও ধর্ম ধ্বজিগণ দীনদুঃখীর জন্য চিন্তা করেছে ?—তাদের ক্ষমতার জীবনীশক্তি এদের নিষ্পেষণ হতেই উদ্ভূত !
বড় বড় ব্যাপার কি কখনও সহজে নিষ্পন্ন হয় ? সময়, ধৈর্য ও অদম ইচ্ছাশক্তিতে কাজ হয়। আমি তােমাদের এমন অনেক কথা বলতে পারতাম, যাতে তােমাদের হৃদয় আনন্দে লাফিয়ে ওঠে, কিন্তু তা আমি বলব না।আমি লােহার মতাে দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি ও হৃদয় চাই, যা কিছুতেই কাঁপে না।দৃঢ়ভাবে লেগে থাকো।
Bengali Quotes of Swami Vivekananda
আমি কাপুরুষতাকে ঘৃণা করি। আমি কাপুরুষদের সঙ্গে এবং রাজনৈতিক আহাম্মকির সঙ্গে কোনও সংস্রব রাখতে চাই না। আমি কোনওরকম রাজনীতিতে (Politics) বিশ্বাসী নই। ঈশ্বর ও সত্যই জগতে একমাত্র রাজনীতি, আর সব বাজে।
সকলে উঠিয়া-পড়িয়া না লাগিলে কি কাজ হয় ? ‘উদ্যোগিনাং পুরুষসিংহমুপৈতি লক্ষ্মীঃ (উদ্যোগী পুরুষসিংহেরই লক্ষ্মী লাভ হয়) ইত্যাদি। পেছু দেখতে হবে না—forward (এগিয়ে চলো)। অনন্ত বীর্য, অনন্ত উৎসাহ, অনন্ত সাহস ও অনন্ত ধৈর্য চাই, তবে মহাকাৰ্য সাধন হবে। দুনিয়ায় আগুন লাগিয়ে দিতে হবে।
পবিত্রতা, অধ্যবসায় এবং উদ্যম—এই তিনটে গুণ আমি একসঙ্গে চাই।
..পবিত্রতা, ধৈর্য ও অধ্যবসায় দ্বারা সব বিঘ্ন দূর হয়। সব বড় বড় ব্যাপার অবশ্য ধীরে ধীরে হয়ে থাকে।
সাহস অবলম্বন করাে ও কাজ করে যাও। ধৈর্য ও দৃঢ়তার সঙ্গে কাজ করে যাও—এই একমাত্র উপায়।
Speech of Swami Vivekananda
যিনি হুকুম তামিল করতে জানেন, তিনিই হুকুম করতে জানেন। প্রথমে আজ্ঞাবহতা শিক্ষা করাে।...আমরা সকলেই হমবড়া, তাতে কখনও কাজ হয় না।মহা উদ্যম, মহা সাহস, মহা বীর্য এবং সকলের আগে মহতী আজ্ঞাবহতা—এই সকল গুণ ব্যক্তিগত ও জাতিগত উন্নতির একমাত্র উপায়।
দেশে কি মানুষ আছে ? ও শ্মশানপুরী। যদি Lower Class-দের education (নিম্নশ্রেণিদের শিক্ষা) দিতে পার, তা হলে উপায় হতে পারে। জ্ঞানবলের চেয়ে বল আর কী আছে—বিদ্যা শেখাতে পার ? বড়মানুষেরা কোন কালে কোন দেশে কার কী উপকার করেছে ? সকল দেশেই বড় বড় কাজ গরিবেরা করে। টাকা আসতে কতক্ষণ ? মানুষ কই ? দেশে কি মানুষ আছে ?
আরও পড়ুন ঃ 25 Swami Vivekananda Bani In Bengali
আরও পড়ুন ঃ Daily Thoughts and Prayers in Bengali
==================================================
0 Comments