পঞ্চম খণ্ড~শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত~তৃতীয় ভাগ

শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত-শ্রীম কথিত
তৃতীয় ভাগ 

পঞ্চম খণ্ড
দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ভক্তসঙ্গে

পঞ্চম খণ্ড~শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত~তৃতীয় ভাগ

==========

প্রথম পরিচ্ছেদ

১৮৮৩, ২০শে অগস্ট
মণিমোহনকে শিক্ষা — ব্রহ্মদর্শনের লক্ষণ — ধ্যানযোগ 

ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ছোট খাটটিতে বসিয়া মশারির ভিতর ধ্যান করিতেছেন। রাত ৭টা-৮টা হইবে। মাস্টার মেঝেতে বসিয়া আছেন — ও তাঁহার একটি বন্ধু হরিবাবু। আজ সোমবার, ২০শে অগস্ট, ১৮৮৩ খ্রীষ্টাব্দ, শ্রাবণের কৃষ্ণা দ্বিতীয়া তিথি।

আজকাল এখানে হাজরা থাকেন, রাখাল প্রায়ই থাকেন — কখনও অধরের বাড়ি গিয়া থাকেন। নরেন্দ্র ভবনাথ, অধর, বলরাম, রাম, মনোমোহন, মাস্টার প্রভৃতি প্রায় প্রতি সপ্তাহেই আসিয়া থাকেন।

হৃদয় ঠাকুরের অনেক সেবা করিয়াছিলেন। দেশে তাঁহার অসুখ শুনিয়া ঠাকুর বড়ই চিন্তিত। তাই একজন ভক্ত শ্রীযুক্ত রাম চাটুজ্যের হাতে আজ দশটি টাকা দিয়াছেন হৃদয়কে পাঠাইতে। দিবার সময় ঠাকুর সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। ভক্তটি একটি চুমকি ঘটি আনিয়াছেন — ঠাকুর বলিয়া দিয়াছিলেন, “এখানকার জন্য একটি চুমকি ঘটি আনবে, ভক্তেরা জল খাবে।”

মাস্টারের বন্ধু হরিবাবুর প্রায় এগার বৎসর হইল পত্নীবিয়োগ হইয়াছে। আর বিবাহ করেন নাই। মা-বাপ, ভাই-ভগ্নী সকলেই আছেন। তাঁহাদের উপর স্নেহ-মমতা খুব করেন ও তাঁহাদের সেবা করেন। বয়ঃক্রম ২৮।২৯। ভক্তেরা আসিয়া বসিলেই ঠাকুর মশারি হইতে বাহির হইলেন। মাস্টার প্রভৃতি সকলে ভূমিষ্ঠ হইয়া প্রণাম করিলেন। ঠাকুরের মশারি তুলিয়া দেওয়া হইল। তিনি ছোট খাটটিতে বসিয়া আছেন ও কথা কহিতেছেন —

শ্রীরামকৃষ্ণ (মাস্টারের প্রতি) — মশারির ভিতর ধ্যান করছিলাম। ভাবলাম, কেবল একটা রূপ কল্পনা বই তো না, তাই ভাল লাগল না। তিনি দপ্‌ করে দেখিয়ে দেন তো হয়। আবার মনে করলাম, কেবা ধ্যান করে, কারই বা ধ্যান করি।

মাস্টার — আজ্ঞা হাঁ। আপনি বলেছেন যে, তিনিই জীব, জগৎ এই সব হয়েছেন — যে ধ্যান করছে সেও তিনি।

শ্রীরামকৃষ্ণ — আর তিনি না করালে তো আর হবে না। তিনি ধ্যান করালে তবেই ধ্যান হবে। তুমি কি বল?

মাস্টার — আজ্ঞে, আপনার ভিতর ‘আমি’ নাই তাই এইরূপ হচ্ছে। যেখানে ‘আমি’ নাই সেখানে এরূপই অবস্থা।

শ্রীরামকৃষ্ণ — কিন্তু “আমি দাস, সেবক” এটুকু থাকা ভাল। যেখানে “আমি সব কাজ করছি” বোধ, সেখানে “আমি দাস, তুমি প্রভু” এ-ভাব খুব ভাল। সবই করা যাচ্ছে, সেব্য-সেবক ভাবে থাকাই ভাল।

মণিমোহন পরব্রহ্ম কি তাই সর্বদা চিন্তা করেন। ঠাকুর তাহাকে লক্ষ্য করিয়া আবার কহিতেছেন —

শ্রীরামকৃষ্ণ — ব্রহ্ম আকাশবৎ। ব্রহ্মের ভিতর বিকার নাই। যেমন অগ্নির কোন রঙই নাই। তবে শক্তিতে তিনি নানা হয়েছেন। সত্ত্ব, রজঃ, তমঃ — এই তিনগুণ শক্তিরই গুণ। আগুনে যদি সাদা রঙ ফেলে দাও সাদা দেখাবে। যদি লাল রঙ ফেলে দাও লাল দেখাবে। যদি কালো রঙ ফেলে দাও তবে আগুন কালো দেখাবে। ব্রহ্ম — সত্ত্ব, রজঃ, তমঃ তিনগুণের অতীত। তিনি যে কি, মুখে বলা যায় না। তিনি বাক্যের অতীত। নেতি নেতি করে করে যা বাকি থাকে, আর যেখানে আনন্দ সেই ব্রহ্ম।

“একটি মেয়ের স্বামী এসেছে; অন্য অন্য সমবয়স্ক ছোকরাদের সহিত বাহিরের ঘরে বসেছে। এদিকে ওই মেয়েটি ও তার সমবয়স্কা মেয়েরা জানালা দিয়ে দেখছে। তারা বরটিকে চেনে না — ওই মেয়েটিকে জিজ্ঞাসা করছে, ওইটি কি তোর বর? তখন সে একটু হেসে বলছে, না। আর একজনকে দেখিয়ে বলছে, ওইটি কি তোর বর? সে আবার বলছে, না। আবার একজনকে দেখিয়ে বলছে, ওইটি কি তোর বর? সে আবার বলছে, না। শেষে তার স্বামীকে লক্ষ্য করে জিজ্ঞাসা করলে, ওইটি তোর বর? তখন সে হাঁও বললে না, নাও বললে না — কেবল একটু ফিক্‌ করে হেসে চুপ করে রইল। তখন সমবয়স্কারা বুঝলে যে, ওইটিই তার স্বামী। যেখানে ঠিক ব্রহ্মজ্ঞান সেখানে চুপ।”

[সৎসঙ্গ — গৃহীর কর্তব্য ]

(মণির প্রতি) — “আচ্ছা, আমি বকি কেন?”

মণি — আপনি যেমন বলেছেন, পাকা ঘিয়ে যদি আবার কাঁচা লুচি পড়ে তবে আবার ছ্যাঁক কলকল করে। ভক্তদের চৈতন্য হবার জন্য আপনি কথা কন।

ঠাকুর মাস্টারের সহিত হাজরা মহাশয়ের কথা কহিতেছেন।

শ্রীরামকৃষ্ণ — সতের কি স্বভাব জানো? সে কাহাকেও কষ্ট দেয় না — ব্যতিব্যস্ত করে না। নিমন্ত্রণ গিয়েছে, কারু কারু এমন স্বভাব — হয়তো বললে, আমি আলাদা বসব। ঠিক ঈশ্বরে ভক্তি থাকলে বেতালে পা পড়ে না — কারুকে মিথ্যা কষ্ট দেয় না।

“আর অসতের সঙ্গ ভাল না। তাদের কাছ থেকে তফাত থাকতে হয়। গা বাঁচিয়ে চলতে হয়। (মণির প্রতি) তুমি কি বল?”

মণি — আজ্ঞে, অসৎসঙ্গে মনটা অনেক নেমে যায়। তবে আপনি বলেছেন, বীরের কথা আলাদা।

শ্রীরামকৃষ্ণ — কিরূপ?

মণি — কম আগুনে একটু কাঠ ঠেলে দিলে নিবে যায়। আগুন যখন দাউ দাউ করে জ্বলে তখন কলাগাছটাও ফেলে দিলে কিছু হয় না। কলাগাছ পুড়ে ভস্ম হয়ে যায়।

ঠাকুর মাস্টারের বন্ধু হরিবাবুর কথা জিজ্ঞাসা করিতেছেন।

মাস্টার — ইনি আপনাকে দর্শন করতে এসেছেন। এঁর অনেকদিন পত্নীবিয়োগ হয়েছে।

শ্রীরামকৃষ্ণ — তুমি কি কর গা?

মাস্টার — একরকম কিছুই করেন না। তবে বাড়ির ভাই-ভগিনী, বাপ-মা এদের খুব সেবা করেন।

শ্রীরামকৃষ্ণ (সহাস্যে) — সে কি? তুমি যে “কুমড়োকাটা বঠ্‌ঠাকুর” হলে। তুমি না সংসারী, না হরিভক্ত। এ ভাল নয়। এক-একজন বাড়িতে পুরুষ থাকে, — মেয়েছেলেদের নিয়ে রাতদিন থাকে, আর বাহিরের ঘরে বসে ভুড়ুর ভুড়ুর করে তামাক খায়, নিষ্কর্মা হয়ে বসে থাকে। তবে বাড়ির ভিতরে কখনও গিয়ে কুমড়ো কেটে দেয়। মেয়েদের কুমড়ো কাটতে নাই, তাই ছেলেদের দিয়ে তারা বলে পাঠায়, বঠ্‌ঠাকুরকে ডেকে আন। তিনি কুমড়োটা দুখানা করে দিবেন। তখন সে কুমড়োটা দুখানা করে দেয়, এই পর্যন্ত পুরুষের ব্যবহার। তাই নাম হয়েছে “কুমড়োকাটা বঠ্‌ঠাকুর”।

“তুমি এ-ও কর — ও-ও কর। ঈশ্বরের পাদপদ্মে মন রেখে সংসারের কাজ কর। আর যখন একলা থাকবে তখন পড়বে ভক্তিশাস্ত্র — শ্রীমদ্ভাগবত বা চৈতন্যচরিতামৃত — এই সমস্ত পড়বে।”

রাত প্রায় দশটা হয় এখনও ৺কালীঘর বন্ধ হয় নাই। মাস্টার বৃহৎ উঠানের মধ্যে দিয়া রাম চাটুজ্যে মহাশয়ের সঙ্গে কথা কহিতে কহিতে প্রথমে ৺রাধাকান্তের মন্দিরে, পরে মা-কালীর মন্দিরে গিয়া প্রণাম করিলেন। চাঁদ উঠিয়াছে, শ্রাবণের কৃষ্ণা দ্বিতীয়া — প্রাঙ্গণ, মন্দিরশীর্ষ, অতি সুন্দর দেখাইতেছে।

ঠাকুর ঘরে ফিরিয়া আসিয়া মাস্টার দেখিলেন ঠাকুর খাইতে বসিতেছেন। দক্ষিণাস্যে বসিলেন। খাদ্যের মধ্যে একটু সুজির পায়েস আর দুই-একখানি লুচি। কিয়ৎক্ষণ পরে মাস্টার ও তাঁহার বন্ধু ঠাকুরকে প্রণাম করিয়া বিদায় গ্রহণ করিলেন। আজই কলিকাতায় ফিরিবেন।
==============

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

১৮৮৩, ৭ই সেপ্টম্বর

গুরুশিষ্য-সংবাদ — গুহ্যকথা

ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ তাঁহার সেই পূর্বপরিচিত ঘরে ছোট খাটটিতে বসিয়া মণির সহিত নিভৃতে কথা কহিতেছেন। মণি মেঝেতে বসিয়া আছেন। আজ শুক্রবার, ৭ই সেপ্টম্বর, ১৮৮৩ খ্রীষ্টাব্দ, ২২ শে ভাদ্র, শুক্লা ষষ্ঠী তিথি, রাত আন্দাজ সাড়ে সাতটা বাজিয়াছে।

শ্রীরামকৃষ্ণ — সেদিন কলকাতায় গেলাম। গাড়িতে যেতে যেতে দেখলাম, জীব সব নিম্নদৃষ্টি — সব্বাইয়ের পেটের চিন্তা। সব পেটের জন্য দৌড়ুচ্ছে! সকলেরই মন কামিনী-কাঞ্চনে। তবে দুই-একটি দেখলাম, ঊর্ধ্বদৃষ্টি — ঈশ্বরের দিকে মন আছে।

মণি — আজকাল আরও পেটের চিন্তা বাড়িয়া দিয়েছে। ইংরেজদের অনুকরণ করতে গিয়ে লোকদের বিলাসের আরও মন হয়েছে, তাই অভাব বেড়েছে।

শ্রীরামকৃষ্ণ — ওদের ঈশ্বর সম্বন্ধে কি মত?

মণি — ওরা নিরাকারবাদী।

[পূর্বকথা — শ্রীরামকৃষ্ণের ব্রহ্মজ্ঞানের অবস্থায় অভেদদর্শন — ইংরেজ হিন্দু, অন্ত্যজ জাতি (Depressed classes), পশু, কীট, বিষ্ঠা, মূত্র — সর্বভূতে এক চৈতন্যদর্শন ]

শ্রীরামকৃষ্ণ — আমাদের এখানেও ওই মত আছে।

কিয়ৎকাল দুইজনেই চুপ করিয়া আছেন। ঠাকুর এইবার নিজের ব্রহ্মজ্ঞানের অবস্থা বর্ণনা করিতেছেন।

শ্রীরামকৃষ্ণ — আমি একদিন দেখলাম, এক চৈতন্য — অভেদ। প্রথমে দেখালে, অনেক মানুষ, জীবজন্তু রয়েছে — তার ভিতর বাবুরা আছে, ইংরেজ, মুসলমান, আমি নিজে, মুদ্দোফরাস, কুকুর, আবার একজন দেড়ে মুসলমান হাতে এক সানকি, তাতে ভাত রয়েছে। সেই সানকির ভাত সব্বাইয়ের মুখে একটু একটু দিয়ে গেল, আমিও একটু আস্বাদ করলুম!

“আর-একদিন দেখালে, বিষ্ঠা, মূত্র, অন্ন ব্যঞ্জন সবরকম খাবার জিনিস, — সব পড়ে রয়েছে। হঠাৎ ভিতর থেকে জীবাত্মা বেরিয়ে গিয়ে একটি আগুনের শিখার মতো সব আস্বাদ করলে। যেন জিহ্বা লকলক করতে করতে সব জিনিস একবার আস্বাদ করলে! বিষ্ঠা, মূত্র — সব আস্বাদ করলে! দেখালে যে, সব এক — অভেদ!”

[পূর্বকথা — পার্ষদর্শন — ঠাকুর কি অবতার? ]

শ্রীরামকৃষ্ণ (মণির প্রতি) — আবার একবার দেখালে যে, এখানকার সব ভক্ত আছে — পার্ষদ — আপনার লোক। যাই আরতির শাঁখঘন্টা বেজে উঠত, অমনি কুঠির ছাদের উপর উঠে ব্যকুল হয়ে চিৎকার করে বলতাম, “ওরে তোরা কে কোথায় আছিস আয়! তোদের দেখবার জন্য আমার প্রাণ যায়।”

“আচ্ছা, আমার এই দর্শন বিষয়ে তোমার কিরূপ বোধ হয়?”

মণি — আপনি তাঁর বিলাসের স্থান! — এই বুঝেছি, আপনি যন্ত্র, তিনি যন্ত্রী; জীবদের যেন তিনি কলে ফেলে তৈয়ার করেছেন, কিন্তু আপনাকে তিনি নিজের হাতে গড়েছেন।

শ্রীরামকৃষ্ণ — আচ্ছা, হাজরা বলে, দর্শনের পরে ষড়ৈশ্বর্য হয়।

মণি — যারা শুদ্ধাভক্তি চায় তারা ঈশ্বরের ঐশ্বর্য দেখতে চায় না।

শ্রীরামকৃষ্ণ — বোধ হয়, হাজরা আর-জন্মে দরিদ্র ছিল, তাই অত ঐশ্বর্য দেখতে চায়। হাজরা এখন আবার বলেছে, রাঁধুনি-বামুনের সঙ্গে আমি কি কথা কই! আবার বলে, খাজাঞ্চীকে বলে তোমাকে ওই সব জিনিস দেওয়াব! (মণির উচ্চহাস্য)

(সহাস্য) — ও ওই সব কথা বলতে থাকে, আর আমি চুপ করে থাকি।

[মানুষ-অবতার ভক্তের সহজে ধারণা হয় — ঐশ্বর্য ও মাধুর্য ]

মণি — আপনি তো অনেকবার বলে দিয়েছেন, যে শুদ্ধভক্ত সে ঐশ্বর্য দেখতে চায় না। যে শুদ্ধভক্ত সে ঈশ্বরকে গোপালভাবে দেখতে চায়। — প্রথমে ঈশ্বর চুম্বক পাথর হন আর ভক্ত ছুঁচ হন — শেষে ভক্তই চুম্বক পাথর হন আর ঈশ্বর ছুঁচ হন — অর্থাৎ ভক্তের কাছে ঈশ্বর ছোট হয়ে যান।

শ্রীরামকৃষ্ণ — যেমন ঠিক সূর্যোদয়ের সময়ে সূর্য। সে সূর্যকে অনায়াসে দেখতে পারা যায় — চক্ষু ঝলসে যায় না — বরং চক্ষের তৃপ্তি হয়। ভক্তের জন্য ভগবানের নরম ভাব হয়ে যায় — তিনি ঐশ্বর্য ত্যাগ করে ভক্তের কাছে আসেন।

দুইজনে আবার চুপ করিয়া আছেন।

মণি — এ-সব দর্শন ভাবি, কেন সত্য হবে না — যদি এ-সব অসত্য হয় এ-সংসার আরও অসত্য — কেননা যন্ত্র মন একই। ও-সব দর্শন শুদ্ধমনে হচ্ছে আর সংসারের বস্তু এই মনে দেখা হচ্ছে।

শ্রীরামকৃষ্ণ — এবার দেখছি, তোমার খুব অনিত্য বোধ হয়েছে! আচ্ছা, হাজরা কেমন বল।

মণি — ও একরকমের লোক! (ঠাকুরের হাস্য)

শ্রীরামকৃষ্ণ — আচ্ছা, আমার সঙ্গে আর কারু মেলে?

মণি — আজ্ঞে না।

শ্রীরামকৃষ্ণ — কোন পরমহংসের সঙ্গে?

মণি — আজ্ঞে না। আপনার তুলনা নাই।

শ্রীরামকৃষ্ণ (সহাস্যে) — অচিনে গাছ শুনেছ?

মণি — আজ্ঞে না।

শ্রীরামকৃষ্ণ — সে একরকম গাছ আছে — তাকে কেউ দেখে চিনতে পারে না।

মণি — আজ্ঞে, আপনাকেও চিনবার জো নাই। আপনাকে যে যত বুঝবে সে ততই উন্নত হবে!

মণি চুপ করিয়া ভাবিতেছেন, ঠাকুর “সূর্যোদয়ের সূর্য” আর “অচিনে গাছ” এই সব কথা যা বললেন, এরই নাম কি অবতার? এরই নাম কি নরলীলা? ঠাকুর কি অবতার? তাই পার্ষদদের দেখবার জন্য ব্যাকুল হয়ে কুঠির ছাদে দাঁড়িয়ে ডাকতেন, “ওরে তোরা কে কোথায় আছিস আয়?”

==========

Post a Comment

0 Comments