ভবিষ্যতের স্বামীজীর আহ্বান

ভবিষ্যতের ইঙ্গিত

ভবিষ্যতের স্বামীজীর আহ্বান

ভবিষ্যতের স্বামীজীর আহ্বান


আদান-প্রদানই প্রকৃতির নিয়ম। ভারতকে আবার যদি উঠিতে হয়, তবে তাহাকে নিজ ঐশ্বর্য-ভাণ্ডার উন্মুক্ত করিয়া পৃথিবীর সমুদয় জাতির ভিতর ছড়াইয়া দিতে হইবে এবং পরিবর্তে অপরে যাহা কিছু দেয়, তাহাই গ্রহণের জন্য প্রস্তুত হইতে হইবে। সম্প্রসারণই জীবন-সংকীর্ণতাই মৃত্যু। ৭।৭

******

যদি আমরা সকলেই অকুতােভয় হইয়া, হৃদয় দৃঢ় করিয়া ভাবের ঘরে এক বিন্দুও চুরি না করিয়া কাজে লাগিয়া যাই, তবে আগামী পঁচিশ বৎসরের মধ্যে আমাদের সকল সমস্যার মীমাংসা হইয়া যাইবে। ৫।৫৯

******

যাহা ভবিষ্যতে হইবে তাহার তুলনায় এই সামান্য সিদ্ধি অতি তুচ্ছ। ... ধর্মের বন্যা আসিয়াছে। আমি দেখিতেছি, উহা পৃথিবীকে ভাসাইয়া লইয়া যাইতেছে।—অদম্য, অনন্ত, সর্বগ্রাসী। ৬।৪৩১

******

ভারত আবার উঠিবে, কিন্তু জড়ের শক্তিতে নয়, চৈতন্যের শক্তিতে; বিনাশের বিজয়পতাকা লইয়া নয়, শান্তি ও প্রেমের পতাকা লইয়া—সন্ন্যাসীর গৈরিক বেশসহায়ে; অর্থের শক্তিতে নয়, ভিক্ষাপাত্রের শক্তিতে। ৫| ৪৬৫

******

আগামী পঞ্চাশ বৎসর আমাদের গরীয়সী ভারতমাতাই আমাদের আরাধ্য দেবতা হউন, অন্য অকেজো দেবতা এই কয়েক বৎসর ভুলিলে কোন ক্ষতি নাই। অন্যান্য দেবতারা ঘুমাইতেছেন; তােমার স্বজাতি (nation)—এই দেবতাই একমাত্র জাগ্রত; সর্বত্রই তাঁহার হস্ত, সর্বত্র তাঁহার কর্ণ, তিনি সকল স্থান ব্যাপিয়া আছেন। ৫। ১৯৮

******

প্রাচীনকালে ঢের ভাল জিনিস ছিল, খারাপ জিনিসও ছিল। ভালগুলি রাখতে হবে, কিন্তু আসছে যে ভারত—Future India-Ancient India (ভবিষ্যৎ ভারত–প্রাচীন ভারত) অপেক্ষা অনেক বড় হবে। যেদিন রামকৃষ্ণ জন্মেছেন, সেইদিন থেকেই Modern India (বর্তমান ভারত)—সত্যযুগের আবির্ভাব। আর তােমরা এই সত্যযুগের উদ্বোধন কর। এই বিশ্বাসে কার্যক্ষেত্রে অবতীর্ণ হও। ৭।৭৫

******

আমাদের জতীয় জীবন অতীতকালে মহৎ ছিল, তাহাতে সন্দেহ নাই, কিন্তু আমি অকপটভাবে বিশ্বাস করি যে, আমাদের ভবিষ্যৎ আরও গৌরবান্বিত। ৭।৮

******

আমাদের মাতৃভূমির পক্ষে হিন্দু ও ইসলাম ধর্মরূপ দুই মহান মতের সমন্বয়ই—বৈদান্তিক মস্তিষ্ক ও ইসলামীয় দেহ—একমাত্র আশা।

আমি মানসচক্ষে দেখিতেছে, এই বিবাদ-বিশৃঙ্খলাভেদপূর্বক ভবিষ্যৎ পূর্ণাঙ্গ ভারত বৈদান্তিক মস্তিষ্ক ও ইসলামীয় দেহ লইয়া মহামহিমায় ও অপরাজেয় শক্তিতে জাগিয়া উঠিতেছে। ৮।৩৯

******

জড়শক্তির লীলাভূমি ইওরােপ যদি নিজ সমাজের ভিত্তি পরিবর্তন করিয়া আধাত্মিকতার উপর স্থাপিত না করে, তবে পঞ্চাশ বৎসরের মধ্যেই উহা ধ্বংসপ্রাপ্ত হইবে। উপনিষদের ধর্মই ইওরােপকে রক্ষা করিবে। ৫|৫১

******

সত্যকে ধরিয়া থাক, আমরা নিশ্চয়ই কৃতকার্য হইব, এ সম্বন্ধে কোন সন্দেহ নাই। কাজ করিয়া যাও। এই মনে করিয়া কাজে লাগ, যেন তােমাদের প্রত্যেকের উপর সমুদয় কাজের ভার। ভাবী পঞ্চাশ শতাব্দী তােমাদের দিকে চাহিয়া আছে। ভারতের ভবিষ্যৎ তােমাদের উপর নির্ভর করিতেছে। কাজ করিয়া যাও। ৭।১২

Post a Comment

0 Comments