Sangeet Sadhanay Vivekananda O Sangeet Kalpataru

সঙ্গীত সাধনায় বিবেকানন্দ ও সঙ্গীত কল্পতরু - দিলীপকুমার মুখোপাধ্যায়

Sangeet Sadhanay Vivekananda O Sangeet Kalpataru
নিবেদন
স্বামীজীর পুণ্য জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর ধর্মজীবন নিয়ে নানাপ্রকার আলােচনা ও গবেষণা-গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু তাঁর সঙ্গীতজীবন ও সঙ্গীতকৃতি সম্বন্ধে কোন পূর্ণাঙ্গ রচনা দেখা যায় নি। সে অভাব পূরণ করবার আশায় এই গ্রন্থ প্রকাশিত হ’ল। গায়ক ও সঙ্গতকার, সঙ্গীতভাবুক ও সুরকার, গান-রচয়িতা ও তত্ত্বদর্শী স্বামীজীর বহুমুখী সঙ্গীতপ্রতিভা সমগ্রভাবে উপস্থাপিত করবার প্রয়াস পেয়েছি। তথ্য ও উপকরণাদি আহরণ করেছি সমসাময়িক বিবরণী ও নির্ভরযােগ্য জীবনী গ্রন্থ থেকে। যে সব গান স্বামীজী গাইতেন বা তাঁর প্রিয় ছিল, তাদের রচয়িতাদের নাম-পরিচয়ও জানিয়েছি এবং প্রসঙ্গত সঙ্গীতজগতের কিছু প্রয়ােজনীয় কথাও এসে গেছে। জিজ্ঞাসু পাঠকপাঠিকাদের হয়তো এসব প্রসঙ্গ ভাল লাগবে।
বর্তমান পুস্তকের পক্ষে বিশেষ গৌরবের কথা—স্বামীজীর সঙ্গীতবিষয়ে একটি লুপ্তপ্রায় রচনা এই সঙ্গে মুদ্রিত হ’ল। স্বামীজীর সম্পাদিত সঙ্গীত সংকলন-গ্রন্থ “সঙ্গীত কল্পতরু”র তাঁরই লিখিত এই উপক্রমণিকাটি সঙ্গীততত্ত্ব বিষয়ে এক দুষ্প্রাপ্য রচনা। তার মধ্যে কয়েক পৃষ্ঠা গানের স্বরলিপি এখানে মুদ্রিত করা গেল না। কারণ বটতলা সংস্করণের মূল-গ্রন্থটি বহু স্থানে, বিশেষ স্বরলিপি অংশে ভ্রমপ্রমাদে পূর্ণ ছিল। গানের স্বরলিপি অংশে মুদ্রণপ্রমাদের মাত্রা এত বেশি যে সংশােধন করতে গেলে রচনাটি একেবারে নতুন হয়ে পড়ে। তাই গান ক’খানির স্বরলিপি অনিচ্ছাসত্ত্বেও বর্জন করতে হল। তবে সঙ্গতযন্ত্রের ঠেকা ও বােলের লিপিমালার (বটতলা সংস্করণে প্রকাশিত) মুদ্রণপ্রমাদ এখানে সংশােধিত হয়েছে। এবং তা সংশােধন করে দিয়েছেন- তবলা-বাদনে বাংলার গৌরব শ্রীহীরেন্দ্রকুমার গঙ্গোপাধ্যায় ও মৃদঙ্গগুণী এ শ্রীপ্রতাপনারায়ণ মিত্র। গঙ্গোপাধ্যায় মহাশয় সংশােধন করেছেন আড়া ঠেকা, ত্রিতাল, একতাল, তিওর ও ঝাঁপতাল এবং মিত্র মহাশয় সংশােধন করেছেন চৌতাল সুরফাঁকতাল, ধামার ও আড় চৌতাল। এ বিষয়ে অকুণ্ঠ সাহায্যের জন্যে হীরেন্দ্রবাবু এবং প্রতাপবাবুকে আমার সশ্রদ্ধ ধন্যবাদ।
সঙ্গীতের ঔপপত্তিক ও ক্রিয়া বিষয়ে স্বামীজীর এই রচনাটি সম্পর্কে
একটি কথা বলা প্রয়ােজন বােধ হয়। প্রায় ৮০ বছর পূর্বে প্রকাশিত এবং তাঁর মাত্র ২৩ বছর বয়সে, প্রচণ্ড মানসিক দ্বন্দ্ব ও বিক্ষোভের কালে লিখিত এই রচনাটি আজকের পরিণত দৃষ্টিতে যদি কেউ বিচার করতে বসেন, তাহলে সুবিবেচনা হবে না। সেযুগে বাংলায় সঙ্গীততত্ত্ব আলােচনা কতদূর অগ্রসর হয়েছিল, সেই নিরিখও মনে রাখা প্রয়ােজন।
এই পুস্তকের ভূমিকা রচনা করেছেন, সঙ্গীত-সাহিত্যে বিশ্রুতকীতি স্বামী প্রজ্ঞানানন্দ মহারাজ। আমার সমস্ত প্রচেষ্টায় তাঁর শুভেচ্ছা ও কল্যাণ কামনা অনুভব করে থাকি। তাঁর প্রতি অকৃত্রিম শ্রদ্ধা ভিন্ন দ্বিতীয় কোন ভাব আমার পক্ষে প্রকাশ করবার নেই। বইয়ের অতি-প্রয়ােজনীয় নির্দেশিকাটি অনেক সময় ব্যয় করে প্রস্তুত করেছেন শ্ৰীতারকেশ্বর চট্টোপাধ্যায়। তাঁর এই সানন্দ সহযােগিতার জন্যে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ।
বইখানি আমার ভক্তিভাজন দাদামশায় শ্রীপ্রমােদকুমার চট্টোপাধ্যায় মহাশয়কে উৎসর্গ করে কৃতার্থ হয়েছি। সুদীর্ঘকাল তিনি রূপলােকের অপরূপ সন্ধানী চিত্র-সম্পদ দান করে এবং বিচিত্র তন্ত্র, তথা ভ্রমণ সাহিত্য রচনা করে দেশকে সমৃদ্ধ করেছেন। তাঁর জীবনব্যাপী শিল্পসাধনা একটি মহৎ প্রেরণাস্থল হয়ে আছে আমার মনােলােকে। প্রথম জীবনে তিনি কিছুকাল সঙ্গীতচর্চাও করেছিলেন। সে সব কথা স্মরণ করে তাঁকে নিবেদন করলুম তারই এক শ্রদ্ধাস্পদ পুরুষের সঙ্গীতজীবনকথা।
ললিত নিলয়। 
৩৯ একবালপুর রােড।
কলিকাতা ২৩
দিলীপকুমার মুখােপাধ্যায়
মহালয়া ১৩৭০
বইটি অনলাইনে পড়তে ও PDF Download করতে নিচে দেখুনঃ-
*****
=====

Post a Comment

0 Comments